ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অবদান রাখায় কর্মীদের আইসিডিডিআর,বি-র স্বীকৃতি 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০০:০৫, ৩ আগস্ট ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

বিশ্বব্যাপী ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসায় এবং টিকাদানের মাধ্যমে কলেরা প্রতিরোধে আইসিডিডিআর,বি নেতৃত্ব দিয়ে চলেছে। আইসিডিডিআর,বি-র মহাখালী সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গাদের এবং বাংলাদেশের জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিয়োজিত প্রতিভাবান এবং নিবেদিত কর্মীদের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।

সেপ্টেম্বর ২০১৭-এ, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাদের (বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের) আগমনের শুরুর দিকে আইসিডিডিআর,বি, বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য সংস্থাসমূহ মিলে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিরুপণ করে। এতে দেখা যায়, কলেরার মহামারী থেকে রক্ষা পেতে আগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। প্রায় দশ লক্ষ মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়ে, নিরাপদ পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্য সংকটে বসবাস করছে, যা সংক্রামক রোগ, যেমন কলেরা বিস্তারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।   

আইসিডিডিআর,বি ১৯৬০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী বড় ধরনের কলেরা মহামারী মোকাবেলা কাজ করে আসছে, এগুলোর মধ্যে সাস্প্রতিক সময়ে মানবিকভাবে বিপর্যস্ত দেশ, যেমন সুদান, ইরাক, সিরিয়া এবং ইয়েমেনের কলেরা মহামারী প্রতিরোধেও প্রয়োজনীয় সহায়তা করেছে।

প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ২৯ লক্ষ মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয় এবং ৯৫ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এ রোগটি প্রায়ই সংঘাতের মধ্যে পড়া অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার অবস্থা সংকটপূর্ণ এবং যেখানে অপুষ্টির ভয়াবহ সমস্যা থাকে। যদি সময় মতো চিকিৎসা না করা হয় তবে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কলেরা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

এসব কারণে, আইসিডিডিআর,বি সরকারকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইন্টারন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটিং গ্রুপের কাছে কলেরার মুখে খাওয়ার টিকার জন্য আবেদন করতে সহায়তা করে এবং ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরিসরের কলেরার টিকাদানের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়, এমন টিকাদান কার্যক্রমের জন্য ১৫০ জনের একটি দলকে নিয়োজিত করে। টিকাদান পরবর্তী জরিপে দেখা যায় ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষকে টিকাদান করা গেছে, যা এক বিশাল সাফল্য, আর এটি সম্ভব হয়েছে চরম প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া আইসিডিডিআর,বি-র কর্মীবাহিনীর কারণে। কলেরার টিকাদান কার্যক্রমের দ্বিতীয় ধাপ এখন চলছে, প্রায় দশ লক্ষ রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাংলাদেশীদের নিয়ে।

এদিকে ঢাকায় ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে। এবছরের মার্চ থেকে মে সময়কালে আইসিডিডিআর,বি-তে ৫৫,২২২ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়। যা ২০০৭ সালের পর গড়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী এবং সাধারণ ধারণক্ষমতার দ্বিগুনেরও বেশি। কিন্তু আইসিডিডিআর,বি-র ঢাকা হাসপাতালের কর্মীরা এর `কোনো রোগীকে ফিরিয়ে না দেওয়ার` আদর্শে অবিচল থাকে। তাঁরা বাড়তি সময় কাজ করেও উচ্চ মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা বজায় রাখেন।
আজ আইসিডিডিআর,বি রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে এবং ঢাকার ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার মানবিক কাজে নিবেদিত কর্মীদের স্বীকৃতি দিতে পেরে গর্বিত।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক জন ডি ক্লেমেন্স। তিনি বলেন, " রোহিঙ্গাদের মানবিক বিপর্যয় এবং ঢাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় কর্মপালনে আত্মবিশ্বাসী, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও কার্যকরী অবদানের জন্য আমাদের ২০ জন কর্মীকে স্বীকৃতি দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। স্বীকৃতি প্রদানে আমাদের মাঝে আমাদের সাফল্যের অংশীদার বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় স্বাস্থ্যসচিবের উপস্থিতি অনুপ্রেরণা মুলক। "

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের মাননীয় সচিব জনাব মোঃ সিরাজুল হক খান আইসিডিডির,বি-র উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টিকা দান কার্যক্রমের সাথে জড়িত এবং ঢাকায় ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাবের মোকাবেলায় জড়িত ব্যক্তিদের কাজের প্রশংসা করেন। তিনি পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান এবং সেই সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের বিশেষ অবদানের জন্য ধন্যবাদ জানান।

আইসিডিডিআর,বি-র ডাক্তার, বিজ্ঞানী এবং সকল স্তরের কর্মীসহ পুরস্কারপ্রাপ্তরা, এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এসি   

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি